Site icon

ঘাগড়া খান বাড়ি মসজিদ

নির্মাণকাল আনুমানিক ৬০০ বৎসর পূর্বে । কথিত আছে ‘পালানো খা’ ও ‘জববার খা’ দুই সহোদর কোন এক রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন। পরাজিত হয়ে ভ্রাতৃদ্বয় এই অরণ্যে আশ্রয় নেন এবং সেখানে এই মসজিদটি স্থাপন করেন।

মসজিদটির বিশেষত্ব হল যে এর ইটগুলো চারকোণা টালির মত। আজ হতে ছয় থেকে সাতশত বৎসর পূর্বে এই ইটগুলির ব্যবহার ছিল। আস্তরণ বা পলেস্তার ঝিনুক চূর্ণ অথবা ঝিনুকের লালার সাথে সুড়কী, পাট বা তন্তু জাতীয় আঁশ ব্যবহার করেছে। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির নির্মাণ কৌশল গ্রীক ও কোরিন থিয়ান রীতির প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায় । প্রবেশ পথের উপর রয়েছে আরবী ভাষায় নির্মাণকাল ও পরিচয় শিলা লিপি দেখে সহজেই অনুমান করা যায় যে, সেই যুগেও দক্ষ স্থপতি এ অঞ্চলে ছিল।

মসজিদটির দরজার ওপর মূল্যবান কষ্টি পাথরে খোদাই করে আরবি ভাষায় হিজরি ১২২৮ এবং ইংরেজি ১৮০৮ সাল উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠাকাল লেখা রয়েছে। মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দুইটি সুদৃঢ় খিলান। এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি বর্গাকার। দৈর্ঘ্য ২৭ ফুট ও প্রস্থ ২৭ ফুট। উভয় দিকই সমান। মসজিদের মাঝখানে বড় গম্বুজের চারপাশ ঘিরে ছোট-বড় ১২টি মিনার। এরমধ্যে চার কোণায় রয়েছে চারটি। দরজা মাত্র একটি। ভেতরে মেহরাব ও দেয়ালে বিভিন্ন কারুকার্য করা ফুলদানী ও ফুলের নকশা।মসজিদটি পুরাকীর্তির এক অনন্য নিদর্শন। যা দেখে যে কোন পর্যটক আকৃষ্ট হবেন, বিমোহিত হবেন।

তৎকালীন খান বাড়ির লোকজনসহ গ্রামের অনেকে মসজিদটির জন্য ৫৮ শতক জমি ওয়াকফ্ করে দেন। এরমধ্যে ৪১ শতক জমি জুড়ে রয়েছে কবরস্থান। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে রয়েছে দুইটি জানালা। মসজিদের ভেতর ইমাম ছাড়া তিনটি কাতারে ১২ জন করে একসঙ্গে ৩৬ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে মসজিদের বাইরের অংশে আরও প্রায় অর্ধশত মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

মুঘল আমলে স্থাপিত এই মসজিদটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এটি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার ঘাঘড়া লস্কর গ্রামে অবস্থিত, আর সে কারণেই এর নাম হয়েছে ঘাঘড়া খান বাড়ি জামে মসজিদ। ১৯৯৯ সালে মসজিদটির রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট অবলম্বনে।

Exit mobile version